নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত মাছ উৎপাদনে সিংহভাগ খরচ হয় খাদ্যে। কিন্তু এরপরেও মাছের বৃদ্ধির জন্য অত্যাবশ্যকীয় আমিষের পরিমাণ সঠিকভাবে বিশ্লেষণ ও নির্ণয় করা সম্ভব হয়না। বর্তমানে আমিষের চাহিদা পূরণে এর বিকল্প হিসেবে ব্ল্যাক সোলজার ফ্লাই বা কালো সৈনিক মাছির চাষ এবং ব্যবহার জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ব্ল্যাক সোলজার ফ্লাই এর জনপ্রিয়তা ও গ্রহনযোগ্যতার মূল কারন হলো ফ্লাইগুলোর প্রায় ৫০% আমিষ যা মাছের দ্রুত বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ছবিঃ ব্ল্যাক সোলজার ফ্লাই পরিদর্শনে টিএমএসএস
দেশে উদ্যোক্তা ও চাষি পর্যায়ে ব্ল্যাক সোলজার ফ্লাই এর চাষ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিশ্ব ব্যাংক ও পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর আর্থিক সহায়তায় টিএমএসএস কর্তৃক বাস্তবায়িত সাসটেইনেবল এন্টারপ্রাইজ প্রজেক্ট (এসইপি) প্রকল্পের পরিবেশবান্ধব ফিশারীজ উদ্যোগ উন্নয়ন উপ-প্রকল্পের আওতায় ময়মনসিংহ জেলার সদর উপজেলাস্থ শম্ভগঞ্জ এলাকার একজন মডেল লিড উদ্যোক্তা হলেন মোঃ মোখলেসুর রহমান। তিনি মৎস্য খামারের পরিত্যক্ত হ্যাচারীর একাংশে ব্ল্যাক সোলজার ফ্লাই এর প্রদর্শনী খামার স্থাপন করেছেন।
ছবিঃ ব্ল্যাক সোলজার ফ্লাই
বর্তমানে তার খামার হতে দৈনিক ৫০-৬০ কেজি লার্ভি উৎপন্ন হচ্ছে যা তিনি তার নিজ খামারের পুকুরে আমিষের বিকল্প উৎস হিসেবে ব্যবহার করছেন। উদ্যোক্তা জানান, প্রতি কেজি লার্ভি উৎপাদনে খরচ পড়ে মাত্র ২২-২৫ টাকা, যেখানে ২৫% আমিষ সমৃদ্ধ মাছের খাদ্যের বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৫০-৬৫ টাকা। এতদ্বারা যেমন তার মাছ উৎপাদন খরচ কম হচ্ছে, অন্যদিকে অধিক আমিষ সমৃদ্ধ খাদ্য প্রাপ্যতার কারণে মাছের দ্রুত বৃদ্ধি নিশ্চিত হচ্ছে।
ছবিঃ ব্ল্যাক সোলজার ফ্লাই থেকে তৈরি মৎস্য খাদ্য
পরিবেশবান্ধব জলবায়ূ উন্নয়ন দৃষ্টিকোণ থেকে পর্যবেক্ষণ করলে আমাদের দেশে ময়লা ও আবর্জনার ব্যবস্থাপনা নিয়ে অনেক সমস্যা রয়েছে। ব্ল্যাক সোলজার ফ্লাই যেহেতু ময়লা ও আবর্জনাকে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে সেহেতু এর চাষ বৃদ্ধি করে মাছের আমিষের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ কমানোও সম্ভব।
শেখ মোঃ মোহায়মেনুল হক
প্রকল্প ব্যবস্থাপক, এসইপি-ফিশারীজ,
টিএমএসএস।